বাহামাসে দেশের পক্ষে ভোট চাইলেন হাইকমিশনার খলিলুর রহমান

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান ‘অনাবাসিক’ হাইকমিশনার হিসেবে বাহামাসের গভর্নর জেনারেল কর্নেলিয়াস আলভিন স্মিথের কাছে গত বৃহস্পতিবার পরিচয়পত্র পেশ করেন। এরপর জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার কাউন্সিল নির্বাচনে মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাহামাসের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান হাইকমিশনার।

শনিবার কানাডার অটোয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে হাইকমিশনারকে আশ্বস্ত করেন।

হাইকমিশন থেকে জানানো হয়, পরিচয়পত্র পেশের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাহামাসের গভর্নর জেনারেল ও নবনিযুক্ত হাইকমিশনার দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। বাহামাসের গভর্নর জেনারেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কর্তৃক প্রণীত রূপকল্প ২০৪১ সহ অন্যান্য জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। গভর্নর জেনারেল জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ অন্যান্য বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে পরস্পরকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এবং বাহামাসের দৃষ্টান্তমূলক সহযোগিতার ইতিহাসও তুলে ধরেন।

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে গভর্নর জেনারেল আগামী আগস্টে নাসাউতে অনুষ্ঠিতব্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ওয়েমেন মিনিস্ট্রিয়াল বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন।

 

হাইকমিশনার গভর্নর জেনারেলকে জানান, বাহামাসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার ও সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে প্রথমবারের মতো দেশটিতে হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়। বিশেষ করে তিনি আর্থিক পরিষেবা এবং পর্যটনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার অপার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। এ সময় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি, মহাপরিচালক ও গভর্নর জেনারেলের কার্যালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন।

পরে হাইকমিশনার বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ এডওয়ার্ড ডেভিস এবং দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী চেস্টার কুপারের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।

বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বৈশ্বিক প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। হাইকমিশনার জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি কমনওয়েলথ ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। উভয়পক্ষ প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর দ্বারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত ও শারম আল শেষে অনুষ্ঠিত কপ-২৭ সম্মেলনে ঘোষিত ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল দ্রুত চালু করতে অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সঙ্গে কাজ করার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

হাইকমিশনার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য বাহামাসের সমর্থন কামনা করেন। তিনি পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ এবং চিহ্নিত করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও আর্থিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া বাহামাসের প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তর করলে তিনি দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সমঝোতা স্মারকটি দ্রুত স্বাক্ষরের বিষয়ে নির্দেশনা দেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।