সুখবিলাসের পাহাড়ে গয়ালের খামার

গরুর মতো দেখতে হলেও গয়ালের শিং দুপাশে ছড়ানো, সামান্য ভেতরমুখী বাঁকানো। শিংয়ের গোড়া অত্যন্ত মোটা। কালো গয়ালের হাঁটুর নিচ থেকে ক্ষুর পর্যন্ত সাদা লোমে ঢাকা। গয়ালের কুঁজ এতো বড় যে তার অবস্থান কাঁধ থেকে পিঠের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিস্তৃত। নাদুসনুদুস এ পশুর একেকটির দাম হাঁকা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। 

দেশের বিভিন্ন গরুর গড় ওজন ২০০ থেকে ৪০০ কেজি। কিন্তু প্রতিটি গয়ালের গড় ওজন ৬০০ থেকে ৭০০ কেজি হয়। প্রতি বছর কুরবানির ঈদ এলেই চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পশুরহাটে বিক্রি হয় গয়াল। কুরবানির পশু হিসাবে কেউ কেউ গয়াল কেনেন। ধীরে ধীরে চাহিদা বাড়ছে। সোমবার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামের পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, গয়ালের বিশাল খামার। খামারের মালিক হচ্ছেন এরশাদ মাহমুদ নিজেই গয়াল দেখাশোনা করেন। তিনি বলেন, কুরবানি উপলক্ষ্যে গয়াল বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাবেন।

খামার থেকেও বিক্রি হবে গয়াল। একেকটির দাম হাঁকা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের একমাত্র বাণিজ্যিক গয়াল খামার রাঙ্গুনিয়ায়। একটি ভালো লক্ষণ। সাধারণত ১০-১১ মাস গর্ভধারণের পর মাদি গয়াল একটি বাচ্চার জন্ম দেয়। গাভির মতো এদের ওলান নেই, স্তনবৃন্ত ছোট হওয়ায় এদের থেকে কখনো দুধ দোহানো যায় না। গয়ালের ব্যবহার জনপ্রিয় হলে দেশি-বিদেশি পশুর ওপর নির্ভরতা যেমন কমে আসবে, তেমনি গয়ালের বাণিজ্যিক লালনপালনে মানুষ আকৃষ্ট হবে। গয়ালের মাংসে কলেস্টেরল কম হওয়ায় এটি মানবদেহের জন্য সব সময় কম ঝুঁকিপূর্ণ। গয়াল শুধু দুর্বল খাবারেই লালন পালন করা হয়ে থাকে এবং এদের দেহে কোনো ধরনের কৃত্রিম ওষুধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে না।

গয়ালের মাংস সবার জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত বলেও জানান এ কর্মকর্তা। গয়াল খামারি এরশাদ মাহমুদ বলেন, একসময় গয়াল বন্যপ্রাণী হিসাবে বিবেচিত হতো। তখন এটি ফাঁদ পেতে বন থেকে ধরে এনে চোরাইপথে বেচাবিক্রি হতো। পরে বনবিভাগ গয়ালের ওপর থেকে বন্যপ্রাণীর পরিচিতি তুলে নিয়ে এটিকে গৃহপালিত গবাদিপশু হিসাবে ঘোষণা দেয়। এরপর থেকে পশুটির বাণিজ্যিক পালন শুরু হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।