সানস্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় ডেউয়া

এমন অনেক দেশি ফল আছে, যাদের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তেমন একটি ফল ডেউয়া। এ ফল গ্রামাঞ্চলে অত্যন্ত পরিচিত হলেও শহরাঞ্চলে এটি একটি অপ্রচলিত ফল। দিন দিন এ ধরনের ফলের চাহিদা অনেক বেড়েছে। বিদেশেও এসব ফল রপ্তানি হচ্ছে। অঞ্চলভেদে এই ফল মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত। ঢেউয়া, ডেলোমাদার, ডেউফল, ঢেউফল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়।

মার্চ মাসে ডেউয়ার প্রায় পাতাহীন ডালপালায় ফুল আসে আর আগস্ট মাসে ফল পাকে। ডেউয়া ফলে কাঁঠালের মতো ভেতরে হলুদ রঙের ছোট ছোট কোষ থাকে। পাকলে ফলটি অতি মোলায়েম হয়। পাকা ফলের ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ হয়। এই ফল পুরোপুরি গোলাকার হয় না। ফলটির গা উঁচু-নিচু হয়। কাঁচা টক টক স্বাদ। কিন্তু পাকলে সেটা তখন অন্য স্বাদ। সেটা টকও নয়, আবার মিষ্টিও নয়। ফলটি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁঠাল ও ডেউয়ার পুষ্টিগুণ অনেকটা একই।

ডেউয়ার পুষ্টিগুণ:

খনিজ- ০.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ- ০.৭ গ্রাম, শর্করা- ১৩.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ- ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১- ০.০২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২- ০.১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি- ১৩৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম- ৩৪৮.৩৩ মিলিগ্রাম।

ডেউয়া ফলের উপকারিতা-

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: ডেউয়াতে বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের কারণে পেটব্যথা কমাতে সহায়তা করে ফলটি। এ ছাড়া যকৃতের নানা অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে ডেউয়া।

মেদ কমানো: মেদভুঁড়ি কমাতে ডেউয়া ফলের রস এক থেকে দেড় চামচ ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে এক মাস খেলে উপকার পাবেন।

মুখে রুচি আনতে: দু-তিন চামচ ডেউয়ার রস ও সঙ্গে একটু লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দুপুরবেলা ভাত খাওয়ার আগে খেলেই মুখে রুচি আসবে।

ত্বকের রুক্ষতা দূর করে: ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে ডেউয়া গাছের ছালের গুঁড়ো ত্বকের রুক্ষতা দূর করে এবং ব্রণের দুষিত পুঁজ বের করে দেয়।

বমি বমি ভাব দূর করতে: বমি বমি ভাব দূর করতে দূর করতে ডেউয়া খান অচিরেই বমি বমি ভাব দূর হবে।

পেটে বায়ু জমলে: এছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ও পেট পরিষ্কার করতেও এই ফল খুবই কার্যকর। পাকা ডেউয়ার রস দেড় চামচ আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে অল্প চিনি দিয়ে প্রতিদিন একবার এক সপ্তাহ খেলে পেটের বায়ুর সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে।

সানস্ট্রোক রোধ: মরিচ, লবণ, চিনি দিয়ে ডেউয়ার ভর্তা খেলে সানস্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: এই ফলে নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও অতিরিক্ত পিপাসা দূর হয়।

ডেউয়ার ভিটামিন সি: ত্বক, চুল, নখ, দাঁত ও মাঢ়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।