ডলার ঘাটতিতে অস্বস্তি

বৈদেশিক মুদ্রায় অস্বস্তি এখনো কাটেনি। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় সার্বিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাব, আর্থিক হিসাব-এমনকি সার্বিক স্থিতিতেও ঘাটতি হচ্ছে। ফলে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ডলারের দাম। বাড়ছে ডলারের ঘাটতিও। এসব কারণে ডলারের বাজারে অস্বস্তি রয়েই যাচ্ছে। এদিকে গত মে মাসে রপ্তানি আয় কিছুটা বাড়লেও রেমিট্যান্স অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে গত অর্থবছরের জুলাই-মের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত রেমিট্যান্স কমেছে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। একই সময়ে রপ্তানি আয় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান খাত রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স থেকে আয় হয়েছে ৬ হাজার ৯৫৩ কোটি ডলার। এর বিপরীতে জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত আমদানি খাতে সাময়িক হিসাবে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। চূড়ান্ত হিসাবে আমদানি ব্যয় আরও বাড়বে। এ হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রায় উদ্বৃত্ত থাকছে ৭১৩ কোটি ডলার। এ থেকে বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা ও হজের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার। এর বাইরে বৈদেশিক ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রার উদ্বৃত্ত থাকছে না। বৈদেশিক আয়ের অন্য খাতের মধ্যে অনুদান কমেছে ২৭ শতাংশ। সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বা এফডিআই কমেছে ১৯ শতাংশ। এতে বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে ঘাটতি হয়েছে ৩৬৪ কোটি ডলার, আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ২২২ কোটি ডলার এবং বৈদেশিক মুদ্রার সার্বিক স্থিতিতে ঘাটতি ৮১৭ কোটি ডলার।

রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি, বেড়েছে প্রবৃদ্ধি : রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ২৪৩ কোটি ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৫৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ডলার। সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, একক মাস হিসাবে এপ্রিলে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। তবে গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। মে মাসে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫১২ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৪৮৯ কোটি ডলার। আয় কম হয়েছে ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। গত বছর একই সময় আয় হয়েছে ৩৮৩ কোটি ডলার। সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ২০৩ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ডলার। আয় বেশি হয়েছে শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময় আয় হয়েছে ৩ হাজার ৮৫২ কোটি ডলার। সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩০ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ১১২ কোটি ডলার। আয় কম হয়েছে দশমিক ৯৫ শতাংশ।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।