ঐতিহ্যবাহী মিঠাপুকুর, জেনে নিন এর ইতিহাস

উত্তরের জেলা রংপুরের অন্যতম উপজেলা মিঠাপুকুর। রাজধানী ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহর রংপুরে  প্রবেশের ঠিক ২০ কিলোমিটার আগেই এর অবস্থান। এই উপজেলার নামটি মূলত মুঘল আমলে খনন করা একটি পুকুরের নাম থেকেই এসেছে। 

কথিত আছে ১৬৬২সালে মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আদেশে সেনাপতি মীর জুমলা কোচ বিহার ও আসাম অভিযান কালে মিঠাপুকুরে এসে অবস্থান নেন।

এ সময় মীর জুমলা তার বিশাল সৈন্য বাহিনীর সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। অবশেষে মিঠাপুকুর মৌজায় শাহ ইসমাইল গাজীর আমলের (৪৫৯-১৪৭৪ইং) খনন করা চারটি ছোট ছোট পুকুরের অস্তিত্ব পান তিনি। সেই চারটি পুকুর নতুন করে খনন করে বড় একটি পুকুরে রূপান্তর করে মীর জুমলার ন্যৈ বাহিনী। যার আয়তন ৩০ একর।

পুকুরটি অবস্থান বর্তমান মিঠাপুকুর থানা ও কলেজের ঠিক পেছনে। খননের পর পুকুরের পানি খাওয়ার উপযোগী ও সুস্বাদু হওয়ায় মীর জুমলা পুকুরটির নাম রেখেছিলেন মিঠাপুকুর।

পুকুরকে ঘিরে ঐ এলাকায় ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুরো এলাকার এবং এক পর্যায়ে উপজেলার নামটিও মিঠাপুকুর হয়ে যায়।

শুধু মিঠাপুকুরের কারণেই নয় আরও কিছু কারণে বাংলার ইতিহাসে জড়িয়ে আছে এই উপজেলা। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মও এই উপজেলারই পায়রাবন্দ গ্রামে।

বেগম রোকেয়ার বাড়ির পাশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩.১৫ একর ভূমির উপর বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে আছে নান্দানিক বাগান, অফিস ভবন, ৪ তলা ডরমেটরি ভবন, গবেষণা কক্ষ, লাইব্রেরি, আধুনিক গেস্ট হাউজ এবং পিতলের তৈরি বেগম রোকেয়ার ভাষ্কর্য। এই জায়গাটিও ঘুরে দেখতে পারেন। তবে বেগম রোকেয়ার পৈত্রিক বাড়িতে বর্তমানে ইটের দেয়ালের গাথুনি ছাড়া কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।

 

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।