আজমতের নৌকা, জাহাঙ্গীরের মা পেলেন টেবিল ঘড়ি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতীক পাওয়ার পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। মেয়র পদে দলীয় প্রতীক ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত প্রতীক থেকে তাদের পছন্দের প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তবে একাধিক প্রার্থীর একই প্রতীক দাবি থাকলে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের দলীয় প্রতীক নৌকা, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন দলীয় প্রতীক (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন (হাতপাখা), জাকের পার্টির প্রার্থী রাজু আহম্মেদ (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম (রনি সরকার) বরাদ্দ পেয়েছেন (হাতি) প্রতীক।

মঙ্গলবার নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে সকাল ৯টায় প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঝে তাদের পছন্দের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়।

মেয়র পদে আটজনসহ ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত আসনে মোট ৩২৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এতে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী রয়েছেন ৭৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে রয়েছেন ২৩৯ জন।

প্রতীক পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান বলেন, আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি। সন্ত্রাস মুক্ত, মাদক মুক্ত একটি সিটি করপোরেশন গড়ে তুলতে পাড়ি। সেই লক্ষ্যে আগামী ২৫ তারিখ নির্বাচনে তাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, জনগণের সেবার যে কাজগুলো আছে, অধিকারগুলো আছে তা সুনিশ্চিত করার জন্য আমি আপনাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি।

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি আশা করি ওই নির্বাচনে আমরা (লাঙ্গল) জয়ী হব। আমি নির্বাচিত হতে পারলে একটি সুন্দর সিটি করপোরেশন গড়ে তুলব। একটি সুন্দর নগরী হবে, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব। আমি শুধু জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে নয়, গণমানুষের লোক হিসেবে গাজীপুরের অনেক উন্নয়ন কাজ করেছি। স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, স্বাস্থ্য সচিব থাকাবস্থায় গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট বিভিন্ন হাসপাতাল নির্মাণে কাজ করেছি। সেই হিসেবে আমি স্বতঃস্ফূর্ত মানুষের সমর্থন পাচ্ছি।

নির্বাচনের স্বচ্ছতার প্রশ্ন তুলে তিনি বিলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানটা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মানুষ নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে। যেখানে যাই সেখানেই মানুষ বলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা! আমি আহ্বান জানাব নির্বাচন কমিশনকে যে আস্থা তারা হারিয়েছে তা ফিরিয়ে আনবে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন তারা উপহার দেবে। নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় তাজউদ্দীন অডিটোরিয়ামে উপস্থিত হন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তিনি রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে তার পছন্দের প্রতীক বরাদ্দের (টেবিল ঘড়ি) চিঠি বুঝে নেন। পরে তিনি বিভিন্ন মিডিয়া কর্মীদের মুখোমুখি হন।

এ সময় তিনি বলেন, নগরবাসীর কাছে মেয়র পদে (টেবিল ঘড়ি) প্রতীকে নিজের জন্য একটি ভোট চাচ্ছি এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি একটি সুষ্ঠু ভোট উপহার দেওয়ার আহবান জানান। এ সময় তার সমর্থনে অডিটোরিয়ামের বাহিরে শত শত কর্মী-সমর্থক ঘড়ি ঘড়ি বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তিনি ওখানে কিছুক্ষণ থেকে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ঠেলে তার নিজ বাড়ি পার্শ্ববর্তী কানাইয়া গ্রামের দিকে চলে যান।

এ সময় সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গেই ছিলেন এবং তিনি সবাইকে তার হয়ে মায়ের জন্য (টেবিল ঘড়ি) প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে গত তিন বছরে নগরবাসীর জন্য তার নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরেন এবং কতিপয় ব্যক্তির দ্বারা তিনি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র ও হয়রানির শিকার বলে দাবি করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।