শিশুকে বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত করবেন না

নবজাতকের প্রথম খাবার মায়ের বুকের দুধ। জন্মের পর প্রথমেই শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানো বাধ্যতামূলক। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধই শিশুর একমাত্র খাবার।  

শাল দুধ বাচ্চার ইমিউনিটি সিস্টেম বিল্ডআপ করে। সবসময় মনে রাখতে হবে প্রকৃতি একজন মাকে নয়মাসে তৈরি করে তার সন্তানকে লালন করার জন্য। বাচ্চাকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ ছাড়া বাইরের অন্য কিছুই খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই, এমনকি পানিও না।

এ সময় মা যাতে সন্তানকে দুধ খাওয়াতে পারেন এজন্যে মাকে  খাওয়াতে হবে। মা ও সন্তান দুইজনের খাবারই মাকে খেতে হবে। সন্তানের খাবার মায়ের বুকের দুধ তৈরি হবে মায়ের শরীরেই।

গত ৭০ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা ও চিকিৎসকরা হাজার হাজার গবেষণা করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যে বাচ্চা জন্মের পরে মায়ের বুকের দুধ পায়নি, সে বাচ্চা বড় হয়ে যত বিত্তবান খ্যাতিমান শক্তিমান বা ক্ষমতাবান হোক না কেনো, সে সবসময়  একটা ফিলিংস অব ইনসিকিউরিটিতে ভোগে।

কারণ নিরাপত্তার কোনো ফিলিংস বা স্মৃতি তার মেমোরিতে নাই। বাচ্চা নিজেকে সবচেয়ে নিরাপদ অনুভব   করে যখন মায়ের বুকের দুধ খেতে খেতে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

‘ফরমুলা ফুড’ বাড়ায় ওজন, কমায় বুদ্ধি!
যারা মা হবেন মেডিকেল কারণ ছাড়া তারা বাচ্চাকে বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত করবেন না। বাচ্চাকে ফরমুলা দুধ খাওয়াবেন না। ফরমুলা দুধ খাওয়ালে বাচ্চা ফার্মের মোরগের মতো মোটা হবে তাজা হবে আর ওজন বাড়বে। বাচ্চার ওজন যদি বেশি হয়ে যায় তাহলে তার বুদ্ধি কমে যাবে।

ওজন বেশি হওয়া কিন্তু সুস্থতা বা ‘স্বাস্থ্য’ না। ‘স্বাস্থ্য’ হচ্ছে একজন মানুষের কর্মক্ষমতা! কতক্ষণ সে কাজ করতে পারে এটা হচ্ছে ‘স্বাস্থ্য’।

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি: 
মায়েরা শিশুকে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে পজিশন বা অঙ্গবিন্যাসে ভুল করে। শিশু শুয়ে রয়েছে, মা গিয়ে দুধ খাওয়াচ্ছে। শিশুটিকে অবশ্যই ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ধরে নিয়ে এরপর সম্পূর্ণ নিপল ও ব্রেস্টের কালো যে অংশটি পুরোটাই শিশুর মুখে দিতে হবে। তা না হলে দুধ কম হতে পারে অথবা সমস্যা হতে পারে।

শিশুকে মা যখনই বুকে লাগায়, তখন একটি বার্তা চলে যায় মায়ের মস্তিষ্কে। সেখান থেকে একটি হরমোন আসে একে বলে প্রোল্যাকটি। এই হরমোন মস্তিষ্ক থেকে এসে মায়ের বুকে দুধ তৈরি করে। কাজেই শিশুকে ঘন ঘন বুকে লাগানোটা খুব জরুরি।

অনেক মা মানে করেন, সন্তানকে বুকে ণাগাবেন না, দুধ পাম্প করে নিয়ে খাওয়াবেন। তাহলে শিশু স্পর্শ করলে যে হরমোন বের হতো, সেটি আস্তে আস্তে না হতে হতে হরমোন থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ দুধ কমে যাবে।

মায়েদের বুকের দুধ বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে। ঘন ঘন শিশুকে বুকে লাগালে বুকের দুধ বাড়ে।

আর মায়ের মনে যদি অশান্তি থাকে বা মা যদি অখুশি থাকে, তাহলে উলটো ফল হয়। সে ক্ষেত্রে অ্যাডিনাইন নামের একটি হরমোনের সৃষ্টি হয়। এই অ্যাডিনাইন এসে দুধটা কমিয়ে দেয়। কাজেই মাকে অনেক বেশি হাসি খুশি থাকতে হবে। মায়ের চারপাশে যারা রয়েছে, তারা যেন মায়ের সঙ্গে খুব সুন্দর ব্যবহার করে, মায়ের সমস্যাগুলো সমাধান করে, মাকে আনন্দে রাখে। ভালো একটি পরিবেশ যেন বজায় রাখে। মা যদি স্বস্তির সঙ্গে থাকে তাহলে দুধ বাড়বে।

এছাড়া কিছু কিছু খাবার রয়েছে এগুলো খেলে বুকে দুধ আসে। বুকের দুধ হলো একটি তরল পদার্থ। মা যেন অনেক তরল খায়। প্রতিদিন এক থেকে তিন গ্লাস দুধ খেল। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য তরল খাবার খেল।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।