যে ভুলগুলো স্মার্টফোনে ভুলেও করা যাবে না

দিন শুরু ও শেষের মাঝের যে বস্তুর সঙ্গে মানুষের সবচেয়ে বেশি সময় কাটে সেটি হলো স্মার্টফোন। আমাদের প্রতিদিনের জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠেছে এ স্মার্টফোন। সারাদিনে স্মার্টফোন দিয়েই চলে নানান কাজ। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অনলাইন শপিং, সিনেমা, খবর, গেমসহ এমন কোনো কাজ নেই যা স্মার্টফোনে করা যায় না। কিন্তু এখান থেকেই শুরু হয় বিপদ।

স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় না জেনেই আমরা অনেক ভুল করে থাকি। লম্বা সময় চার্জে দিয়ে, সারাদিন গান শোনা, আপডেট আসলে ফোনের ফিচার নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে আপডেট না দেওয়াসহ নিজের অজান্তেই এ ধরনের অনেক কাজ আমরা করে থাকি। তবে আমাদের প্রতিদিনের করা এ কাজগুলো ফোনের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা জানলে ভুলেও আপনি এ ধরনের কাজ করবেন না।

জেনে নিন কোন ভুলগুলো স্মার্টফোনে ভুলেও করা যাবে না-

সারারাত চার্জিং : স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে করা আরেকটি কমন ভুল হলো সারারাত ধরে ফোন চার্জ দেয়া। এ ভুলটি প্রায় সবাই করে থাকেন। বর্তমানে একাধিক ফোনে ব্যাটারি হেলথ নিয়ন্ত্রণ করার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তবুও সারারাত ধরে ফোন চার্জে লাগিয়ে রাখার অভ্যাস একদমই ভালো নয়। কারণ সারারাত চার্জিংয়ের ফলে ফোনের ব্যাটারি হিট/গরম হয়ে যায়। এর ফলে বোমার মতো ফেটে যায় স্মার্টফোন। এমন ঘটনার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। আর এ অভ্যাস বেশিদিন চলতে থাকলে ফোনের ব্যাটারি বেশিদিন টেকে না।

ফোনের সফটওয়্যার আপডেট এড়িয়ে যাওয়া : নতুন স্মার্টফোন কেনার পর একটা সময় পর তাতে একাধিক সফটওয়্যার আসে। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা এ আপডেট দেন না বা করেন না। যদি আপনিও এ কাজটি করে থাকেন তাহলে আজই তা বাদ দিন। কারণ এটি করে আপনি আপনার সখের ফোনটির মারাত্মক ক্ষতি করছেন। মনে রাখবেন, এই সফটওয়্যার আপডেটে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য দেয়া থাকে যা আপনার ফোনে ম্যালওয়্যার ভাইরাস প্রবেশ করতে বাধা দেয়। একই সঙ্গে পাওয়া যায় একগুচ্ছ নতুন ফিচার্স। যা আপনার স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা আরও ভালো করবে ও ফোনের হ্যাং হয়ে যাওয়াও বন্ধ করবে।

অ্যাপকে ফোনের সব পারমিশন দেওয়া : প্লে স্টোর থেকে নতুন কোনো অ্যাপ ইন্সটল করার পর সেটি আপনার ফোনের বেশকিছু জিনিসের অ্যাক্সেস চায়। এর মধ্যে ওই অ্যাপটির প্রয়োজনীয় কিছু পারমিশন থাকে, আর কিছু থাকে অবাঞ্ছিত। আর এখানেই ভুল করেন অধিকাংশ মানুষ। পারমিশনের নামে আপনার ফোনে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিগত ফাইলের অ্যাক্সেস পেয়ে যায় তারা। তাই নতুন অ্যাপ ইন্সটল করার আগে অবশ্যই যাচাই করুন তারা কী কী পারমিশন চাচ্ছে।

অন্য চার্জার/কেবল ব্যবহার : জেনেশুনে অনেকেই এ কাজটি করে থাকেন। অন্য চার্জারে নিজের স্মার্টফোন চার্জ দিলে ফোনের ব্যাটারির মারাত্মক ক্ষতি হতে। বর্তমানে অধিকাংশ ফোনে ইউএসবি টাইপ-সি চার্জিং পোর্ট ব্যবহার করা হয়। এরপরও অনেকে অন্য চার্জার দিয়ে ফোন চার্জ করেন। এর ফলে আপনার সখের স্মার্টফোনের আয়ু কমে যেতে পারে।

ব্যাকআপ এড়িয়ে যাওয়া : সারাদিনে বহু ছবি, ফাইল স্মার্টফোনে জমা হয়। সেগুলো অনন্তকাল ধরে স্মার্টফোনে সেভ থাকে না। তাই স্মার্টফোনে ফাইল ব্যাকআপ করার অপশন দেয়া হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস দুই অপারেটিং সিস্টেমেই এই সুবিধা পাওয়া যায়। তাই গুরুত্বপূর্ণ ছবি, ফাইল সেভ করে রাখার জন্য সেগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর ব্যাকআপ করে রাখা উচিত। এতে স্মার্টফোনও হালকা হয়।

অবিশ্বস্ত সোর্স থেকে ডাউনলোড : বর্তমানে অনেক অ্যাপ আছে যেগুলো বিশ্বস্ত সোর্স যেমন গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়না। যেমন এপিকে ফাইল। এগুলোকে বলা হয় থার্ড পার্টি অ্যাপ। অবিশ্বস্ত সোর্স থেকে থার্ড পার্টি অ্যাপ ইন্সটল করা মোটেও উচিত নয়। কারণ এগুলো বেশিরভাগেই ম্যালওয়্যার ভাইরাস থাকে যা আপনার ফোনের সমস্ত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নেয়। অ্যাপল কখনোই থার্ড পার্টি অ্যাপ ডাউনলোড করার অনুমতি দেয় না। কিন্তু অ্যান্ড্রয়েডে এ কাজটি করা যায় বিধায় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

সারাদিন ব্লুটুথ অন : অনেকেরই স্মার্টফোনে সারাদিন গান শোনার অভ্যাস রয়েছে। ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করার জন্য অনেকক্ষন ধরে ব্লুটুথ অন করে রাখতে হয়। আপনি হয়তো জানেন না এর মাধ্যমেও আপনার ফোন হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা থাকে। তাই যখন ইয়ারফোন ব্যবহার করবেন না তখন ব্লুটুথ অফ করে রাখুন।

পাবলিক ওয়াইফাই : পাবলিক ওয়াইফাই পেলে ব্যবহার করেন না এমন মানুষ খুবই কম আছে। কিন্তু আপনার অজান্তেই এখানেও লুকিয়ে থাকে বিপদ।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।