মন্ত্রী-এমপি, আ.লীগ নেতার হাতেই ২০ লাইসেন্স!

চট্টগ্রাম বন্দরে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর হিসাবে একযোগে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে অন্তত ২০টি মন্ত্রী, মেয়র, এমপিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতার প্রতিষ্ঠান।

মন্ত্রী-এমপিদের সুপারিশেও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পেয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের মতো জটিল ও বিশেষ কাজের ন্যূনতম অভিজ্ঞতাও নেই।

এ খাতের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ-শ্রমিক অসন্তোষ রোধসহ নানা কারণে যে লাইসেন্স প্রথা বিলুপ্ত করা হয়েছিল ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেই প্রথাকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এতে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত অসুস্থ প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে। পেশিশক্তির কাছে বন্দর জিম্মি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে।

যদিও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে-সব ধরনের নিয়ম-কানুন মেনে এবং বন্দরের ক্ষমতা বলেই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এতে পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে বন্দরের গতিশীলতা বাড়বে। এ নিয়ে বন্দরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে তোলপাড় চলছে। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

সূত্র জানায়, বন্দরের সদ্যবিদায়ি চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. শাহজাহানের শেষ সময়ে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হয়। যদিও বহু বছর ধরে চলে আসা লাইসেন্স প্রথা ২০০৭ সালে বাতিল করা হয়। এরপর শিপ হ্যান্ডলিং এবং বার্থ অপারেটিং প্রথা চালু করা হয়। অর্থাৎ টেন্ডারের মাধ্যমে হ্যান্ডলিং ঠিকাদার নিয়োগ শুরু হয়। কিন্তু কোনো আবেদন আহ্বান না করে এবং কঠোর গোপনীয়তায় একযোগে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়া হয়।

২৭ এপ্রিল বোর্ড সভায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দেওয়ার ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

নতুন লাইসেন্স দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে-চট্টগ্রামের শালুটিকার অ্যাসোসিয়েটস, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস, এনএমটি-এমএসএন লিমিটেড, জিডি হারবার সার্ভিসেস, লামিসা এন্টারপ্রাইজ, পোর্টহারবার ইন্টারন্যাশনাল, আহমেদ মেরিটাইম লজিস্টিকস, শাহী শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং, মা ট্রেডিং, এস ট্রেডিং, মেসার্স তাইফুল এন্টারপ্রাইজ, কিউএনএস গ্লোবাল লজিস্টিকস লিমিটেড, এমএস ওশান কন্ট্রাক্টিং অ্যান্ড সাপ্লাইয়িং ফার্ম, গফুর ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং, এসএস কনসাল্টিং লিমিটেড, এবি করপোরেশন, ঢাকার আরিয়ান ট্রেডার্স লিমিটেড, ব্রিজেক্স ইনফ্রাক্সার লিমিটেড, গুড এলায়েন্স সার্ভিসেস লিমিটেড, আর কে করপোরেশন, কেয়ার শিপিং অ্যান্ড ফ্রেইট লিমিটেড, যশোরের কেএএস ট্রেডি, খুলনার খুলনা ইউনিয়ন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।