চিনির বাজারে কৃত্রিম সংকট, পেঁয়াজ-সবজির দামে নাকাল ভোক্তা

মিল থেকে চিনির সরবরাহ কমিয়ে রাজধানী ও চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। ফলে বাজারের সব দোকানে মিলছে না চিনি। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে খোলা চিনি ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও সেই দরে পাওয়া যাচ্ছে না, বরং যে কয়েকটি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। 

এ ছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়িয়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আদার দাম ৩৬০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও সব ধরনের সবজি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে। এতে পণ্য কিনতে নাকাল হচ্ছেন ভোক্তা।

শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরাবাজার ও চট্টগ্রাম চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

সকাল ১০টা, রাজধানীর নয়াবাজারে গিয়ে মাত্র ৪টি দোকানে খোলা চিনি বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। তবে বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া বেলা ১২টায় কাওরানবাজারে গিয়ে চিনির সংকট দেখা যায়। বাজারে সেখানেও বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৩৫-১৪০ টাকা।

কাওরানবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. শাহ আমানত আলী বলেন, মিল থেকে চিনির সরবরাহ নেই। মিল মালিকরা সরকারের সঙ্গে বৈঠক করে চিনির দাম বাড়িয়ে খুচরা পর্যায়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করলেও তারা চিনি সরবরাহ করছে না। বাজারে এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রেখেছে।

এ ছাড়া দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে চিনির দামে অস্থিরতা কাটছে না। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই ভোগ্যপণ্য। বেধে দেওয়া দামের চেয়ে ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে মিলগুলো চিনির সরবরাহ একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে। পর্যাপ্ত পরিশোধিত চিনি আমদানি সত্ত্বেও শুধু এই কারসাজিতে বাজার থেকে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১২৪-১২৫ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা পর্যায়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ব্যবসায়ীরা জানান, চিনির বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ কেন্দ্রিক কয়েকটি সিন্ডিকেট জিম্মি করে রেখেছে। সিন্ডিকেট বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে চিনির বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে তারা।

এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ২ লাখ ২১ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন চিনি আমদানি হয়েছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি খোলার জটিলতায় গত অর্থবছরের তুলনায় চিনি আমদানি কিছুটা কম হলেও পরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে তুলনামূলক বেশি। যার পরিমাণ ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন। ফলে মিল মালিকদের চিনি পরিশোধনের খরচ যেমন কমেছে, তেমনি কাস্টমসও শুল্ক আদায় করেছে প্রতি কেজিতে ৪৩ সেন্ট হিসাবে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।