যুক্তরাষ্ট্রের ‘গলার কাঁটা’

দায়িত্ব নেওয়ার মাস কয়েকের মাথায় গত বছরের আগস্টে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগান যুদ্ধের কৌশল ঘোষণা করেন। আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা উপস্থিতি নিয়ে একসময় ট্রাম্পকে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল। অথচ সেই তিনিই নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে দেশটিতে মার্কিন সেনা উপস্থিতি দীর্ঘায়িত করার সিদ্ধান্ত দেন। একই সঙ্গে বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেন, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনারা জয়ের জন্য লড়বে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের জয় কবে আসবে, কীভাবে আসবে, আদৌ আসবে কি না—সে প্রশ্ন রয়েই যায়। আর এসব প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর খোদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও নেই। আসলে আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। না পারছে সইতে, না পারছে ছাড়তে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার জেরে আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসন শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসের নিরাপদ স্বর্গ সমূলে উৎপাটনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নতুন, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক আফগানিস্তানের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। আফগান যুদ্ধ আজও শেষ করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। বরং তারা তাদের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ লড়ে চলছে। খরচের দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই যুদ্ধ সবচেয়ে ব্যয়বহুল।

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি বেশ জটিল। দেশটির গণতন্ত্র নড়বড়ে। সরকার দুর্বল। প্রতিষ্ঠান নাজুক। দুর্নীতি সর্বত্র। সুশাসন সুদূর পরাহত। সেনা, পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সক্ষমতা সীমিত। দেশটিতে তালেবান ফুলেফেঁপে উঠছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে আইএস। মার্কিন সেনাবাহিনীও স্বীকার করেছে, আফগানিস্তানে তালেবানসহ অন্যান্য উগ্রবাদী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে। বাড়ছে রক্তক্ষয়ী হামলা।

আমেরিকা আফগানিস্তানে ঠিক কী করছে, তার সহজ-সাপটা উত্তর নেই। আবার যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ কীভাবে শেষ করবে, তার রূপরেখাও স্পষ্ট নয়।

ট্রাম্প যখন ক্ষমতা নেন, তখন আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে আট হাজার। এখন তা বেড়ে ১৪ হাজার। ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে আরও মার্কিন সেনা পাঠানোর কথা। এই বসন্তে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার সংখ্যা ১৫ হাজারে উন্নীত হতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment

* বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরসেভেন.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।