মাত্র ১৩ ওভার তখন বাকি । মাঠে থাকা অধিনায়ক বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ইতোমধ্যে তুলে ফেলেছিলেন ৪ উইকেটে ৩৯২ রান। খানিক নির্ভারই হয়ত ছিল স্বাগতিকরা। তবে অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন শুরুতে বাবর ও পরের বলে ফাহিম আশরাফকে ফিরিয়েই খেলায় প্রাণ ফিরিয়ে আনেন। এরপরে ফেরান সাজিদ খানকেও।
যদিও শেষদিকে রিজওয়ানের দৃঢ়তায় ম্যাচ ড্র করে পাকিস্তান। তবে খেলা শেষ হওয়ার ৩ ওভার আগে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন রিজওয়ান। এক্সট্রা কভারে উসমান খাজা ৯১ রানে থাকা রিজওয়ানের সেই সহজ ক্যাচ ফেলে দিয়ে স্বাগতিকদের ড্র করতে সুবিধা করে দেয়। শেষের আগের ওভারে শতক হাঁকিয়ে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান।
শেষদিনে অস্ট্রেলিয়া ৯০ ওভারে পাকিস্তানের ৫ উইকেট তুলতে পারে। জয়ের পেছনে না ছুটে পাকিস্তানী ব্যাটাররা সারাদিনে তোলেন ২৫৩ রান। শেষ পর্যন্ত ৫০৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে পাকিস্তান ৭ উইকেটে ৪৪৩ রান তোলে।
এদিন আগের দিনে শতক হাঁকানো বাবর ১০২ রান ও আবদুল্লাহ শফিক ৭১ রান নিয়ে খেলতে নামেন। লাঞ্চের আগে শফিককে ৪ রান দূরে থামিয়ে দেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ৩০৫ বলে ৯৬ রান করেন শফিক।
পাঁচে নামা ফাওয়াদ আলম অধিনায়ক বাবরকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। ৯ রান করে কামিন্সের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফিরলে পঞ্চম উইকেটে বাবরের সঙ্গে ১১৫ রানের জুটি গড়ে তোলেন রিজওয়ান। এই দুই ব্যাটার উইকেটে কাটিয়ে দেয় ৪১ ওভার।
টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের সর্বোচ্চ রান করা বাবর দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তেই ছিল। তবে নাথান লায়ন ৪২৫ বলে ১৯৬ রান করা বাবরকে লাবুশেনের ক্যাচে পরিণত করে ফেরান। ডাবল সেঞ্চুরি মিস করলেও চতুর্থ ইনিংসে অধিনায়ক হিসেবে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নিজের করে নেন বাবর। ১৯৯৫ সালে ইংল্যান্ডের মাইকেল আথারটনের করা অপরাজিত ১৮৫ রানের রেকর্ড ২৭ বছর পর নিজের দখলে নেন বাবর। ম্যাচ ড্র করা ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাবর।
বাবর ফেরার পর লায়ন ফাহিম ও সাজিদকেও তাড়াতাড়ি ফেরান। তবে নোমান আলীকে নিয়ে শেষ ৮ ওভার সাবধানে কাটান রিজওয়ান। নিজেও তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক। শেষ পর্যন্ত ১৭৭ বলে ১০৪ রান করে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান। নাথান লায়ন ১১২ রানে নেন ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৫৫৬/৯ ডিক্লে.
(উসমান খাজা ১৬০, স্মিথ ৭২, ক্যারে ৯৩; সাজিদ ২/১৬৭, ফাহিম ২/৫৫)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৪৮/১০
(বাবর ৩৬; স্টার্ক ৩/২৯)
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৯৭/২ ডিক্লে.
(খাজা ৪৪*, লাবুশেন ৪৪; শাহীন ১/২১)
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৪৪৩/৭
(বাবর ১৯৬, রিজওয়ান ১০৪, শফিক ৯৬; লায়ন ৪/১১২)
ফল: ম্যাচ ড্র
সিরিজ: দুই ম্যাচ শেষে তিন ম্যাচের সিরিজটি ০-০ সমতায়
ম্যাচ অফ দ্যা ম্যাচ: বাবর আজম