তৃতীয় এলএনজি টার্মিনাল হবে কক্সবাজারে

জ্বালানি ঘাটতি পূরণে কক্সবাজারের মহেশখালীতে আরও একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ) স্থাপন করা হবে। সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং লিমিটেড (সামিট গ্রুপ) ৬০০ এমএমসিএফ ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় এই টার্মিনালটি স্থাপন করবে। বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

এদিন ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এক কার্গো এলএনজি আমদানি এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ ও টিসিবির জন্য ভোজ্যতেলসহ ১২ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা। দুটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভা শেষে এসব কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্য ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের জন্য অধিক পরিমাণ এলএনজি আমদানি করতে হয়। সে সুবিধার্থে কক্সবাজারের মহেশখালীতে এই ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন, ২০২১ এর আওতায় এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্য সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিং কো. লি. একটি প্রস্তাব দাখিল করে। প্রস্তাবটি সভায় গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়। দেশে বর্তমানে দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। মহেশখালীতে প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট সক্ষমতার এ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করে ইউএসএ-এর এক্সেলরেট এনার্জি এবং সামিট গ্রুপ। ১৫ বছর মেয়াদি এ টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি রয়েছে ২০৩২ সাল পর্যন্ত। তবে এরই মধ্যে এ টার্মিনাল চুক্তির মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয় কক্সবাজারের মহেশখালী উপকূলে স্থাপিত ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের সরবরাহ সক্ষমতা মোট এক হাজার (৫০০+৫০০) এমএমসিএফডি।

আরও জানা যায়, টিসিবির জন্য ১২ হাজার ৫০০ মে. টন চিনি আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৬৪ কোটি ৫২ লাখ ১৯ হাজার টাকা। এছাড়াও ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানির অপর একটি প্রস্তাবেও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১২৯ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকার টু সরকার ভিত্তিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৩ লাখ ৯০ হাজার মে. টন, কাতার থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার মে. টন এবং সৌদি আরব থেকে ৫ লাখ ১০ হাজার মে. টন ইউরিয়া সার আমদানির তিনটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

এছাড়া দেশের ১৪ হাজার ২০০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ওষুধ ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে ওষুধ কিনবে। এতে ব্যয় হবে ২৪৯ কোটি ৯৯ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫১ টাকা।

‘শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রিজ অ্যাপ্রোচ) সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের ডব্লিউপি-৩ প্যাকেজের নির্মাণকাজের ক্রয়প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশের কাছ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি মেট্রিক টন ৩১৯.৮ ডলার হিসাবে ব্যয় হবে ৯৫ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ মার্কিন ডলার। সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১০৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৭ টাকা।

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment