আজ জাতির পিতার জন্মদিন

আজ ১৭ মার্চ – আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এই দিনটিতেই জন্ম নিয়েছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯২০ সালের এই দিনে রাত ৮টায় তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ বংশের আদরের ‘খোকা’। সেই খোকাই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির ‘মুজিব ভাই’, ‘বঙ্গবন্ধু’ এবং জাতির পিতা। এই মহান নেতার হাত ধরেই আসে বাঙালির চির কাঙ্খিত স্বাধীনতা। বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র।

গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ এবং জনগণের প্রতি মমত্ববোধের কারণে পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। এক রাজনৈতিক সংগ্রামবহুল জীবনের অধিকারী এই নেতা বিশ্ব ইতিহাসে ঠাঁই করে নেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসাবে। বাঙালি জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদান চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।

জাতির মুক্তির সংগ্রাম করতে গিয়ে যৌবনের ১৪টি বছর কারাগারে কাটিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-র ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। তাঁর দৃঢ়চেতা নেতৃত্বে পুরো জাতি স্বাধীনতার জন্য তৈরি হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে মনোযোগী হন বঙ্গবন্ধু, কিন্তু তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে নিহত হন। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীত ধারায় পরিচালিত হতে শুরু করে। জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে একবছর মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। তবে দেশে করোনা সংক্রমণের কারণে মুজিববর্ষ প্রথমে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ও পরে আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির চিরন্তন প্রেরণার উত্স। রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক। বাংলাদেশকে জানতে হলে বাঙালির মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে হবে, বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে, নোঙর ফেলুক বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলায়’।


সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Comment